পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের উৎপাদিত শস্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শস্য হচ্ছে ধান। এখানকার উল্লেখযোগ্য ফল হচ্ছে, আম, জাম,কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল,তাল, সুপারি, পেপে,কলা,আমডা,লেবু, ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে উৎপন্ন হয়। মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, ধনে, ইত্যাদি মসলা জাতীয় শস্য, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, শিম, বরবটি, কাকরল, ঢেড়শ, গোল আলু, বেগুন, টমেটো ইত্যাদি সবজি প্রচুর পরিমানে উৎপাদিত হয়। ফসলের মাঝে প্রধানত: বি.আর:-১০,১১,২৮,৩০ জাতীয় ধান ও বোরো ধান হয়। এছাড়া দেশী ধানের মধ্যে সমাধান ও বীজতলা জাতীয় ধান চাষ করা হয়।
এছাড়া অত্র ইউনিয়নে প্রচুর পরিমান লবণ উৎপাদন হয়। এখানে রয়েছে চিংড়ী ঘের ও পুকুর যাতে বিভিন্ন জাতের মাছ, কাকড়া উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছের চাষ করা হয় পুকুর ও মৎস্য খামারে ।
সুপারিশঃ ১। বর্তমানে মাছ চাষের জন্য সরকারি কোন ব্যাংক লোন নাই। তাই পূঁজি সরবরাহের জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংক লোন দেয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।
২। আধুনিক পদ্ধতিতে পোনা, সার, মাছের খাবার এবং পদ্ধতি পর্যাপ্ত সরবরাহ করা উচিত।
৩। আধুনিক পদ্ধতিতে বন্যার সময় হবঃরহম এর মাধ্যমে মাছ চাষ করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা, প্রযুক্তি ও উপকরণ সরবরাহ করা উচিত।
৪। প্রান্তিক চাষীদের স্থানীয় ও সরারিভাবে অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
৫। খাদ্যের দামে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন যাতে খাদ্যের দাম ও গুণগত মান গ্রহনীয় মাত্রায় থাকে।
৬। মাছ চাষে পানি ও মাটি নির্বাচনে উপযোগী টৈকনিক্যাল সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
৭। রাষ্ট্রীয় আইন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ বন্ধ করা প্রয়োজন।
৮। মৎস্য তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রকে আধুনিকীকরণ ও তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
৯। ঝঃড়পশরহম মাছের পোনা ক্রয় করে আনার পর সরাসরি বড় পুকুরে না দিয়ে আলাদাভাবে নার্সারী পুকুরে রেখে ৫/৬ মাস যত্ন নেয়া উচিত। মাছের মৎড়tঃয আসলে তারপর বড় পুকুরে দেয়া উচিত।
মাছ চাষের বর্ষপঞ্জী
১। বৈশাখ (এপ্রিল-মে)ঃ-এ সময়টাতে কার্পজাতীয় মাছ ডিম পাড়ে। এ কারণে রেনু চাষীদের জন্য এ সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। রেনু চাষের জন্য আতুঁর পুকুর বা নার্সারী পুকুর তৈরীর উপযুক্ত সময়। ভালভাবে শুকানো, অতিরিক্ত কাঁদা অপসারণ তলদেশ পরিচর্যার এখনই সময়। চুন, গোবর, এবং সার প্রয়োগ করে পুকুরে পানি সরবরাহ করে পানিতে প্রাকৃতিক খাবার জন্মাতে হবে। গত বছরের বড় চারা আকারে পোনা ছাড়ার জন্য মজুদ পুকুর ও পরিচর্যা করা নিতে পারে।
২। জৈষ্ঠ্য (মে-জুন) গত মাসে আতুঁর পুকুরে ছাড়া রেনু পোনা ইতিমধ্যে ধানী পোনায় রূপান্তরিত হয়েছে। চারা পোনার জন্য গত মাসে তৈরী করে রাখা চারা পুকুরে এ মাসে ধানী পোনা মজুদ করতে হবে।
৩। আষাঢ় (জুন-জুলাই) যারা মজুদ পুকুরে গত বছরের ছোট নলা মাছ রেখেছে তারা এখন ঠিকভাবে খাবার দিতে পারে এবং যাদের কাছে বড় মাছ আছে তারা এ সময়ে বাজারে মাছ বিক্রি করলে ভাল বাজার দাম পাবে। ধানী পোনা সংগ্রহ করে চারা পুকুরে মজুদ করতে পারবে।
৪। শ্রাবণ (জুলাই-আগষ্ট) চারা পুকুরে জৈষ্ঠ্য মাসে ছাড়া পোনা ৩ইঞ্চি-৪ইঞ্চি হয়ে থাকলে এ সময়ে তা মজুদ পুকুরে স্থানান্তর করা দরকার। পূর্বের মজুদ পুকুরে রাখা মাছ বিক্রি করে দেয়া আবশ্যক। মজুদ পুকুরের জন্য আদুল পোনা না থাকলে তা সংগ্রহ করে এখনি মজুদ করা দরকার।
৫। ভাদ্র (আগষ্ট-সেপ্টেম্বর) মজুদ পুকুরে এখন নিয়মিত খাবার দিতে হবে। মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা আবশ্যাক। পুকুরের পানির পি এইচ মেপে প্রয়োজনে চুন দেয়া যেতে পারে।
৬। আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) পুকুরে জলজ আগাছা জন্মালে তা তুলে নিতে হবে। পানিতে প্রাকৃতিক খাবারের ঘাটতি হলে সার প্রয়োগ করা আবশ্যক। মাছের খাদ্য প্রদান ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষন করতে হবে।
৭। কার্তিক: (অক্টোবর-নভেম্বর) মাঝে মাঝে হররা টেনে দেয়া আবশ্যাক। এ মাসের শেষের দিকে শীত পড়বে। পুকুরের পানি শোধন এবং প্রতিরোধ হিসেবে পুকুরের প্রতি শতাংশ আধা কেজি চুন প্রয়োগ করা হলে মাছের জন্য ভাল হবে।
৮। অগ্রহায়ন: (নভেম্বর-ডিসেম্বর) এ মাসের সারের ব্যবহার কমানো উচিত। অজৈব সার পরিমিত ব্যবহার করা যেতে পারে। অধিক ঘনত্বের মাছ কিছু সংখ্যক তুলে ফেলতে হবে।
৯। পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারী) মাছ খুব কম খাবে। পুকুরের সার প্রয়োগে সচেতন হতে হবে। মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনে চুন প্রয়োগ করা যেতে পারে। পুকুরে গ্যাস হতে পারে হররা টানা দরকার।
১০। মাঘ (জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী) নিয়মিত হররা টানতে হবে। প্রতি শতাংশে আধা কেজি চুন প্রয়োগ করতে হবে।
১১। ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারী-মার্চ) মাছ আবার খেতে শুরু করবে। পুকুরে হররা টানা ছাড়াও চুন প্রয়োগ করতে হবে। পানির পরিমান বেশি কমে গেলে পানি বাড়াতে হবে।
১২। চৈত্র (মার্চ-এপ্রিল): নতুন নার্সারী পুকুর বা চারা পুকুর তৈরি শুরু করলে তা এমাসেই শেষ করতে হবে।
ধান চাষঃ
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস